ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫ , ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
কিশোরগঞ্জে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে আটক বাণিজ্যিক আমদানি ও চোরাচালানের অন্যতম পথ শাহজালাল বিমানবন্দর রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় ৩ খুন কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুতে প্রতিবন্ধকতা সালমান-আনিসুল শাজাহানসহ রিমান্ডে ৫ নূরুল হুদা মবকাণ্ডে বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা-সালাহউদ্দিন রাষ্ট্রপতিকে শপথ পাঠ করানো সংক্রান্ত রুল শুনানি ৭ জুলাই সাবেক সিইসিকে মব করে হেনস্তার ঘটনা নিন্দা পরিবেশ উপদেষ্টার ধুঁকছে শিল্প খাত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে ৩১ দফার কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিএনপি নেতা মশিউর রহমান গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন করেছেন তালতলীতে আমতলীতে সড়ক দূর্ঘটনায় বাবা মেয়েসহ নিহত তিন এবার বর্ণবাদের অভিযোগ আনলেন রুডিগার সিটির সামনে দাঁড়াতে পারলোনা আল আইন ১০ জন নিয়েই দাপুটে জয় পেলো রিয়াল অবশেষে ক্রিকেটারদের পাওনা অর্থ দিতে রাজি হলো ওমান টেস্টের নেতৃত্ব থেকেও সরে যাওয়ার গুঞ্জন শান্তর যা কারণে জাতীয় দলে জায়গা পেলেন না সোহান ওয়ানডে দলে জায়গা না পেয়ে সোহানের আক্ষেপ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের ওয়ানডে দল ঘোষণা নগর ভবন খুলে দেবেন ইশরাকের সমর্থকরা
ঢাকা কাস্টম হাউজের সংস্কারের প্রস্তাব

বাণিজ্যিক আমদানি ও চোরাচালানের অন্যতম পথ শাহজালাল বিমানবন্দর

  • আপলোড সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ১১:২৮:৩২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ১১:২৮:৩২ পূর্বাহ্ন
বাণিজ্যিক আমদানি ও চোরাচালানের অন্যতম পথ শাহজালাল বিমানবন্দর
উত্তরা প্রতিনিধি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১ ও ২-এ একসঙ্গে আটটি ইনকামিং ফ্লাইটে প্রায় চার হাজার যাত্রী নামার সুযোগ রয়েছে। যদিও পিক আওয়ারে এ সংখ্যা ২-৩ হাজারে দাঁড়ায়। আর কাস্টমস হলে একত্রে ২০০-৩০০ যাত্রী প্রবেশ করতে পারেন। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম না থাকায় সবাইকে তল্লাশি করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে নবনির্মিত টার্মিনাল ৩-এ ১৬টি বেল্টে একসঙ্গে ১৬টি ফ্লাইটে প্রায় আট হাজার যাত্রী নামতে পারবেন। এ টার্মিনালের কাস্টমস হল অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় ২০০-২৫০ যাত্রী একত্রে প্রবেশ করানো যাবে। ফলে নতুন টার্মিনালে ঝুঁকি আরো বাড়বে। একদিকে অধিকসংখ্যক যাত্রীকে তল্লাশি করলে সেবার মান কমে যায়, অন্যদিকে কম করলে চোরাচালান বেড়ে যায়। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই স্বল্প জনবল দিয়ে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম চালাচ্ছে ঢাকা কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ। ফলে দেশের প্রধান এ বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিক আমদানি ও চোরাচালানের অন্যতম পথ হয়ে উঠেছে। টার্মিনাল ৩ চালু হলে এ পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। সম্প্রতি ঢাকা কাস্টম হাউজের পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বরাবর পাঠানো একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাবে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সমস্যা সমাধানে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম কাজে লাগাতে হবে। বিদ্যমান সিসিটিভি ক্যামেরার সঙ্গে অ্যাডভান্সড এআই বেজড ফেসিয়াল রিকগনিশন ক্যামেরা (এফআরসি) সিস্টেম স্থাপন করা হলে নিয়মিত যাতায়াতকারীসহ সন্দেহভাজন যাত্রীদের সহজে চিহ্নিত করা যাবে। সিসিটিভির আওতায় এলেই ওই সিস্টেম যাত্রীকে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বার্তা পাঠাবে, যাতে তল্লাশি করা যায়। বিমানবন্দরের ক্যাটারিং গেট ও ৮ নম্বর গেটে ভেহিকল স্ক্যানার স্থাপন করতে হবে। ক্যাটারিং সার্ভিস এলাকায় কাস্টমসের কোনো ডিউটি থাকে না। এর আগে এ দুই গেট দিয়ে স্বর্ণের চালান পাচারের সময় আটক হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তাই খাবারের গাড়ি ও খাবারের উচ্ছিষ্ট বহনের গাড়ি স্ক্যান করার জন্য ক্যাটারিং সার্ভিস ভবনের সামনে একটি ভেহিকল স্ক্যানার স্থাপন জরুরি। ৮ নম্বর গেট দিয়ে সব গাড়ি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ও বের হয়। এখানে কাস্টমস ডিউটি থাকে। তবে গাড়িতে ম্যানুয়াল চেকিং খুব বেশি ফলপ্রসূ হয় না। এ গেটেও একটি ভেহিকল স্ক্যানার বসানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা কাস্টম হাউজ। কার্গো আমদানি ও শুল্কায়ন প্রক্রিয়ায় অ্যাডভান্স কার্গো ইনফরমেশন সিস্টেম (এসিআইএস) চালুর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এটি একটি কেন্দ্রীয় সিস্টেম। চাইলে একটি সিস্টেমেই সারা দেশের সব কাস্টম হাউজের সব আমদানির আগাম তথ্য মূল উৎস থেকে সংগ্রহ করা যাবে। বিমানবন্দরের অ্যাসাইকুডা সিস্টেম সম্পূর্ণ অটোমেটেড না হওয়ায় ফিজিক্যাল নথি বাদ দেয়া যায়নি। অথচ পৃথিবীর কোনো দেশ স্থায়ীভাবে ফিজিক্যাল ফাইল ও ডিজিটাল সিস্টেম একত্রে ব্যবহার করে না। বিমানবন্দরে চার শিফটে দায়িত্ব পালন করে কাস্টমস। প্রতি শিফটে গড়ে ১৬-১৭ জন কর্মকর্তা কাজ করেন। পিক আওয়ারে ছয়-সাতটি ফ্লাইট একত্রে ল্যান্ড করে। তখন বিমানবন্দরে প্রায় ৫ হাজার যাত্রী থাকে। বিদ্যমান চারটি স্ক্যানারের মাধ্যমে ৪০-৪৫ মিনিটের মধ্যে ১৬-১৭ জন কর্মকর্তা দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০-৭০টি ব্যাগ স্ক্যান করা যায়। বাকিরা বিনা স্ক্যানিংয়েই চলে যায়। অধিকাংশ বিমানবন্দরে বর্তমানে ল্যান্ডসাইডের পরিবর্তে এয়ার সাইডে স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়। প্রতি বেল্টে দু-তিনটি করে স্ক্যানার বসানো হয়, যাতে ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যে বড় ফ্লাইটের সব ব্যাগ স্ক্যান সম্পন্ন করা যায়। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাগগুলো ডাইভার্টিং বেল্ট দিয়ে কাস্টমস রেড চ্যানেলে নিয়ে আসা হয়। যাত্রীকে রেড চ্যানেলে এনে ব্যাগেজের অধিকতর পরীক্ষণ করা হয়। সব ব্যাগ স্ক্যান করার কারণে ঝুঁকি হ্রাস পায়। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রীকে আগাম চিহ্নিত করতে অধিকাংশ দেশ অ্যাডভান্সড পেসেঞ্জার ইনফরমেশন (এপিআই) সিস্টেম ব্যবহার করে। ফলে তারা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে প্রকৃতপক্ষে কাজে লাগাতে পারে। সঙ্গে পর্যাপ্ত হিউম্যান বডি স্ক্যানারসহ আধুনিক আরো অনেক সুবিধা যুক্ত করা হয়। বর্তমানে আমদানি কার্গো টার্মিনালে খালাস পর্যায়ে গেটে একটি স্ক্যানার রয়েছে। এয়ারসাইডে তিনটি গেটে মোট চারটি পেলেট স্ক্যানার বসাতে হবে। একই সঙ্গে বারকোড স্ক্যানার ও বারকোড সিস্টেম বাস্তবায়ন করা যায়, যা দিয়ে প্রতিটি প্যাকেটকে চিহ্নিত করা যাবে। পেলেট স্ক্যানার ও বারকোড স্ক্যানারের তথ্য অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে আসার জন্য ইন্টিগ্রেশন লাগবে। একটি এয়ারওয়ে বিল নম্বর একটি মাত্র ফ্লাইটে ব্যবহৃত হবে। সেই এয়ারওয়ে বিল দিয়ে একটি বিল অব এন্ট্রি হবে। তাহলে পণ্য চালান চিহ্নিত করা সহজতর ও শুল্ক ফাঁকির সুযোগ কমে যাবে। ঢাকা কাস্টম হাউজে কুরিয়ার ইউনিটে ই-কমার্স, নমুনা, উপহার ইত্যাদি সামগ্রীর জন্য এক্সপ্রেস ডেলিভারি সিস্টেম নেই। এখানে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো পিসিসি কোড চালু করা বা অন্য কোনো আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে আগাম পণ্য চালানটিকে প্রেরক, প্রাপক ও কাস্টমসের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং এক্সপ্রেস ক্লিয়ারেন্স ব্যবস্থা চালু করার কথা বলা হয়েছে। রফতানি কার্গো টার্মিনালে পরীক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও কোনো স্ক্যানার নেই। ফলে যতটুকু পরীক্ষণ করা হয় তার শতভাগই কায়িক পরীক্ষা। এ সমস্যার সমাধানে টার্মিনালে একটি ভেহিকল ও একটি পেলেট স্ক্যানার বসাতে হবে। একইভাবে নতুন রফতানি টার্মিনালে একটি ভেহিকল স্ক্যানার ও দুটি পেলেট স্ক্যানার বসাতে হবে। এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস : নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের জন?্য এয়ারসাইডে স্ক?্যানার মেশিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। ডাইভারটিং মেকানিজম বসানোর চিন্তা করা হলেও সমস?্যা হচ্ছে এখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এছাড়া আরএফআই ট?্যাগ বসানোর বিকল্প চিন্তা করা হলেও এমন মেশিন খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরএফআই ট?্যাগ লাগানো সম্ভব। ডাইভারটিং মেকানিজম বসাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো। অনেক দেশে ওয়াক থ্রু হিউম্যান বডি স্ক্যানার ব?্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ মেশিন ঘণ্টায় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে স্ক?্যান করতে পারে। এজন?্য অর্থ চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালের জন?্য দুই সেট মেশিন এবং তৃতীয় টার্মিনালে দুই সেট মেশিন বসানোর পরিকল্পনা আছে। তৃতীয় টার্মিনাল এয়ারসাইডে ব?্যাগেজ বসানো শেষ হওয়ার পর প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালের কাজ করা হবে। এআই বেজড ফেসিয়াল রিকগনিশন ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে কাস্টম হাউজের কাছে এ ধরনের ক?্যামেরার স্পেসিফিকেশন চাওয়া হয়েছে বলেও জানান এনবিআরের এ সদস্য। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এসব বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। অনেকগুলো ব্যাগেজ স্ক্যানার কেনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো স্থাপন করা সম্ভব হলে বেল্টে ওঠানোর আগেই সব ব্যাগেজ স্ক্যান করা সম্ভব হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ